অ্যালার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

আপনারা কি অ্যালার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি উপযুক্ত জায়গায় এসেছেন। এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে আপনি অ্যালার্জি দূর করার উপায় জানার পাশাপাশি অ্যালার্জি হবার লক্ষণসমূহ,অ্যালার্জির ওষুধ, কোন খাবারে এঅ্যালার্জি আছে কিংবা কোন খাবারে অ্যালার্জি নেই এসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।


অ্যালার্জির ইংরেজি হলো(Allergy)। অ্যালার্জি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখনই পুরো পোস্টটি পড়া শুরু করুন।

ভূমিকাঃ

অ্যালার্জি হলো একটি অস্বাভাবিক ইমিউন সিস্টেম প্রতিক্রিয়া। এটি সাধারণত নিরীহ পদার্থের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখায়। অ্যালার্জি বিভিন্ন ভাবে আমাদের শরীরে ধুকতে পারে, যেমন- হাঁচি, চুলকানি, ফুসকুড়ি।অ্যালার্জির তীব্রতা হালকা থেকে গুরুতর পর্যন্ত হতে পারে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগুলি মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে। 

এটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা যা বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করে। অ্যালার্জির উপসর্গগুলি হতে পারে, যা হালকা অস্বস্তি থেকে শুরু করে, যেমন হাঁচি এবং চুলকানি থেকে শুরু করে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া, যেমন শরীরের বিভিন্ন স্থান ফোলা, শ্বাস নিতে অসুবিধা বা এমনকি অ্যানাফিল্যাক্সিস, ইত্তাদি। 

তবে আমরা যদি অ্যালার্জি দূর করার উপায় পেতে চাই, তাহলে আমাদের কে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। তাছাড়াও অ্যালার্জি হতে মুক্তি পাওয়ার জন্য অনেক ওষুধ বাজারে রয়েছে। এগুলো সেবনে অ্যালার্জি শরীর থেকে দূর হয়।অনেক খাবার খাওয়ার মাদ্ধমেও এটি হয়ে থাকে তবে আমারা সেগুলো থেকে বিরত থাকলে অ্যালার্জি আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না।

এলার্জির লক্ষণ সমূহ কি কি?

এলার্জি একেক মানুষের একেক রকম হয়ে থাকে। বর্তমানে এলার্জি জনিত সমস্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। সাধারণত এই সমস্যাটি জেনেটিক এর মাধ্যমে হয়ে থাকে। তবে শৈশব কালে কোন ব্যক্তি যদি সংক্রামক রোগের সংস্পর্শে আশা কোন মানুষের সাথে ওঠাবসা করে কিংবা পরিবেশ দূষণের ফলে এলার্জি হয়ে থাকে। অ্যালার্জি দূর করার উপায় থাকলেও আগে অ্যালার্জির লক্ষণ সমূহ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো-
  • যদি কোন মানুষের চোখ লাল হয়ে যায় তাহলে এটি এলার্জির লক্ষণের মধ্যে পরে।
  • মানুষের শরীরে প্রচন্ড চুলকানি শুরু হলে।
  • হঠাৎ করে কাশি,হাঁচি,এবং নাক দিয়ে পানি পরা।
  • শ্বাসকষ্টের প্রচন্ড সমস্যা হওয়া।
  • বমি হওয়া কিংবা পেট ব্যথা করা।র
  • হাত-পায়ের কিংবা শরীরের বিভিন্ন জায়গা ফুলে যাওয়া।ইত্যাদি।

অ্যালার্জি দূর করার উপায়ঃ

আমরা যদি নিচের বিশ্লেষণ করা তথ্যগুলো সম্পূর্ণ পড়ি তাহলে আমরা রক্তের এলার্জি দূর করার উপায়,ত্বকের এলার্জি দূর করার উপায়,নাকের অ্যালার্জি দূর করার উপায়,পায়ের এলার্জি দূর করার উপায়,বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়,এলার্জি দূর করার উপায় কি?কোল্ড এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবো। যেমন-
  • প্রথমে আমাদেরকে জানতে হবে কোন কোন খাবার অ্যালার্জি বাড়ায়। যেগুলো খাবার খেলে অ্যালার্জি বৃদ্ধি হয় সেগুলো খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • ময়লা পরিবেশ থেকে দূরে থাকতে হবে এবং নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। শরীরে ময়লা আবর্জনা লাগে এমন জায়গায় চলাফেরা করা যাবে না বা এমন পরিবেশে থাকা যাবে না।
  • যে কোন খাবার খাওয়ার আগে খাবারগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে পাক করতে হবে।
  • ময়লা পরিবেশে থাকলে মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
  • মানুষ যখন অনেক ক্লান্ত হয়ে যায় তখন তাদের শরীর থেকে ঘাম ঝরে এতে অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। যখন এমন পরিবেশ হবে তখন তাদেরকে ঘাম ঝরার সময় ঠান্ডা পরিবেশে বসতে হবে।
  • যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে তাদেরকে নদী কিংবা পুকুরে গোসল করা উচিত না। নদী কিংবা পুকুরে অনেক ময়লা থাকার কারণে অ্যালার্জির সমস্যা হয়।
  • অনেক ধাতুর কারণে অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে।। যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তাদেরকে এসব ধাতু ব্যবহার হতে বিরত থাকতে হবে।
  • আমরা দৈনন্দিন জীবনে অনেক প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকি যেমন শ্যাম্পু ফেসিয়াল করার ক্রিম ইত্যাদি। এসব প্রোডাক্টের কারণে অ্যালার্জি হতে পারে। তাই এসব প্রোডাক্ট ব্যবহার করার আগে সাবধানতা বজায় রাখতে হবে।
  • বাসা বাড়ির ভেতরে কোন গাছ থাকলে তা কেটে ফেলতে হবে কারণ গাছে নাম না জানা অনেক পোকা বাসা বাঁধে। আর এসব পোকা হতে অ্যালার্জি হতে পারে।
  • বাসা বাড়িতে ছত্রাক জন্মায় এমন পরিবেশ থাকলে তা পরিষ্কার রাখতে হবে।
  • ভেজা কাপড় বাসার ভেতরে শুকানো যাবে না বরং বাসার ছাদে কিংবা বাসা থেকে দূরে শুকাতে হবে।
  • নারকেল তেল হালকা গরম করে আক্রান্ত জায়গায় লাগাতে হবে এরপর প্রায় ২৫ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে এলার্জি আক্রান্ত জায়গা ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • আমরা যদি এলার্জি হবার স্থান সমূহ তে নিম পাতা কিংবা অ্যালোভেরা আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে তা কিছুক্ষণ পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধৌত করি হলে এলার্জি থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
  • যেগুলো খাবার খেলে এলার্জি বৃদ্ধি হয় সেসব খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের পরিচয়। এর ফলে এলার্জির হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। ইত্যাদি।

কি কি খাবারে এলার্জি আছে?

এলার্জি মূলত অনেক ধরনের খাবারের মধ্যেই রয়েছে। এগুলো খাবার খেলে শরীরে এলার্জি শুরু হয়। এলার্জি হলে সাধারণত গায়ে চুলকানি সহ বিভিন্ন জায়গা ফুলে যায়। অ্যালার্জি দূর করার উপায় জানা থাকলে আমাদের অনেক ভালো হবে। যেসব খাবারে এলার্জি রয়েছে তা হলো-
  • গরুর দুধ খেলে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে।
  • গমের রুটি বা গম দিয়ে তৈরি পাউরুটি খেলে এলার্জি হয়ে থাকে।
  • অনেক শিশু রয়েছে যারা ডিম খাওয়ার ফলে এলার্জি রোগে আক্রান্ত হয়।
  • অনেক সবজি রয়েছে যেগুলো সবজিতে এলার্জি রয়েছে অর্থাৎ এগুলো সবজি খেলে শরীরে এলার্জি দেখা যায়। যেমন- বেগুন,গাজর,টমেটো,কচু ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে বেগুনে সবচেয়ে বেশি এলার্জি হয়ে থাকে।
  • আবার অনেক সময় ফল খাওয়ার মাধ্যমেও এলার্জিজনিত সমস্যা হয়ে থাকে। যেমন-কলা।
  • আমাদের মধ্যে এমন অনেক অনেক রয়েছে যারা চিনা বাদাম খেয়ে থাকে কিন্তু এখনই তাদের কে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ চিনা বাদাম খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে অ্যালার্জি শুরু হয়। সাধারণত শিশুদের বেশি হয়ে থাকে।
  • যেসব খাবারে সালফাইট যুক্ত থাকে সেগুলো খাবার খাওয়ার ফলে শরীরে এলার্জি দেখা যায়।
  • প্রতিদিন শিশু থেকে শুরু করে যুবক কিংবা বৃদ্ধ বয়সের নারী ও পুরুষরা মাছ খেয়ে থাকে। কিন্তু এসব মাছের মধ্যেও এমন অনেক মাছ রয়েছে যেসব খেলে শরীরে এলার্জি দেখা দেয়।যেমন- সামুদ্রিক মাছ,স্যালমন,টুনা ইত্যাদি।
  • শেলফিশ এর কারনেও শরীরে এলার্জি হতে পারে।
  • আবার সয়া দাঁড়াও শরীরে এলার্জি হয়ে থাকে।ইত্যাদি।

কি কি খাবারে অ্যালার্জি নাই?

আমরা জানি ভিটামিন ই সম্পূর্ণ খাবার আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। ভিটামিন ই সম্পন্ন খাবার খেলে এলার্জিজনিত সমস্যা হতে মুক্ত থাকা যায়। ভিটামিন এ যুক্ত খাবার হলোঃ 
  • সরিষা বীজ,
  • বাদাম চিনা বাদাম কিংবা চিনা বাদামের মাখন,
  • পালং শাক,
  • কলার্ড গ্রিনস,
  • বিট গ্রিনস,
  • অ্যাসপারাগাস,
  • সোয়াবিন তেল,
  • সূর্যমুখী,
  • পেপারীকা,
  • কুমড়ো,
  • ইলিশ মাছ,
  • লেবু,
  • মরিচ,
  • আখরোট,
  • শালগম,
  • বাঁধাকপি,
  • চর্বি বিহীন মাছ,
  • কুসুম,
  • ব্রকলি,
  • মটরশুঁটি ইত্যাদি।

এলার্জি ঔষধ এর নাম কি?

এলার্জি থেকে রক্ষা পেতে মানুষ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ওষুধ থাকে খেয়ে থাকে। এলার্জি খুবই অসুস্থ কর একটি রোগ বা সমস্যা। অ্যালার্জি দূর করার উপায় সমুহের মধ্যে ঔষধ একটি ভালো উদাহরণ। এলার্জি হলে মানুষ খুবই বিরক্ত বোধ করে। রক্ষা পেতে কয়েকটি ওষুধের নাম নিচে দেওয়া হলোঃ
  • অ্যালারনেক্স ১২০ এম জি,
  • গ্লেনফাইন ১২০ এম জি,এ্যালাট্রোল,
  • হিস্টাকাইন্ড ১২০ এম জি,সেটিজি্‌ন,
  • সেট্রিন,ফেনোফেক্স,
  • ফেনাডিন,ফেক্সো,
  • এলারন(Alaron),ফেক্সোফাস্ট,
  • এরন,অ্যাসিট্রিন,
  • অ্যাট্রিজিন,ক্লাডিন,
  • লোরা,লরাট,
  • লরাটিন,ওরিন,
  • সিলোরা,অ্যালানিন,
  • অ্যাক্সোডিন,অ্যাক্সোফেন,
  • ডিনাফেক্স,নোসেমিন,
  • অনটিন,রিনিল,
  • ট্রিজিন,ডিকনজেস্ট্যান্ট ইত্যাদি।

আমাদের পরামর্শঃ

আমরা প্রায়ই অ্যালার্জির সমস্যায় ভুগি। অ্যালার্জি সাধারণ মনে হলেও আসলে কিন্তু সাধারণ না।অ্যালার্জির কারণে মানুষের অনেক সমস্যা হয়ে থাকে। তবে আমরা এই সমস্যা মোকাবেলা করতে পারি। উপরের আলোচনায় অ্যালার্জি দূর করার উপায় গুলো আমরা যদি ভালোভাবে মেনে চলি তাহলে অ্যালার্জির সমস্যা হতে রক্ষা পেতে পারি।

অ্যালার্জি হতে মুক্তির সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হলো সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকে জীবনযাপন করা। যেহেতু খাবার খাওয়ার মাধ্যমে অ্যালার্জি হয় সেহেতু আমাদেরকে অনেক সচেতনতা বজায় রেখে খাবার খাওয়া উচিত। যেগুলো খাবারে মাধ্যমে অ্যালার্জি হয় তা থেকে দূরে থাকাই আমাদের জন্য উত্তম।

পোস্টটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করে পাশে থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url