দিনে কয়টা কলা খাওয়া উচিত

তারা কি দিনে কয়টা কলা খাওয়া উচিত এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছে এখানে কলা বিষয়ে আরো কিছু জানতে পারবেন। যেমন-কলা খাওয়ার উপকারিতা- অপকারিতা, কলা গাছের বৈশিষ্ট্য, কলা গাছের ব্যবহার।


 
কলা আমাদের অনেক উপকার করে থাকে। কলা খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে পুষ্টি বৃদ্ধি হয় তবে অতিরিক্ত কলা খাওয়া হতে বিরত থাকাই ভালো কারণ এতে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কলা বিষয়ে সকল কিছু বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়তে থাকুন

ভূমিকাঃ 

কলা যেকোনো জায়গায় হয়ে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশে কলা চাষ প্রচুর পরিমাণে করা হয় অন্যান্য ফল গুলোর মত কলার পুষ্টি গুলো অনেক। কলা এমন একটি ফল যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী হয়ে থাকে। কলার বিভিন্ন জাত রয়েছে। কাঁচা অবস্থায় কলার রং হয়ে থাকে সবুজ আবরণ এবং কলা পেকে গেলে তা হলুদ রঙে সেজে ওঠে। 

পাকা কলা খেতে খুবই সুস্বাদু হয়। বিশেষ করে দুধ কলা এবং ভাত একসাথে মিশিয়ে খেতে ভারি মজা লাগে এটি শুধুমাত্র বাঙালিরা বুঝতে পারে। কলা ছোট শিশু হতে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকল বয়সের মানুষের একটি প্রিয় ফল হিসেবে পরিচিত। কোন কিছু অতিরিক্ত ঠিক নয় যেমন কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক থাকলেও কলা কিন্তু আমাদের শরীরে ক্ষতি পর্যন্ত করে থাকে। 

কলা খাওয়ার উপকারিতাঃ

কলা ছোট থেকে বড় সকল বয়সের মানুষই খেতে পারে। কলায় থাকা পুষ্টি মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারি।কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো
  • আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয়ে থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হতে রক্ষা পেতে হলে কলা হতে পারে একটি ভালো মাধ্যম। কলা খাওয়ার মাধ্যমে মানুষের কষ্ট কাঠিন্য সমস্যা দূর হয়ে থাকে।
  • যেসব মানুষের হজমে গন্ডগোলের সমস্যা রয়েছে অর্থাৎ কোন কিছু খেলে তা হজম হতে পারে না তাদের জন্য কলা উপযুক্ত একটি ফল। কলা খাওয়ার মাধ্যমে সমস্যা দূর হয়ে থাকে।
  • কলা এমন একটি ফল যা খেলে ক্ষুধা দূর হয়ে থাকে অর্থাৎ আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা ঘন ঘন খাবার খেয়ে থাকে। এটি মূলত একটি সমস্যা কিন্তু কলা খাওয়ার মাধ্যমে ক্ষুধা বেশি লাগে না বরং কলা খাওয়ার মাধ্যমে অল্পতেই পেট ভরে যায়।
  • প্রতিনিয়ত কলা খাওয়ার মাধ্যমে কলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যেমন শরীরে কোন ক্ষতস্থান থাকলে তা দ্রুত ঠিক হয়ে উঠে।
  • নিয়মিত কলা খাওয়ার কারণে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থাকে। তাই আমাদেরকে প্রতিদিন ২ কিংবা একটি করে কলা খাওয়া উচিত।
  • কলা খাওয়ার উপকারিতা এর মধ্যে নিয়মিত যদি কলা খাওয়া হয় তাহলে আমাদের শরীরে থাকা কিডনি ভালো থাকে।
  • কলা খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে হৃদ রোগের আশঙ্কা কমে যায়। শরীরের হৃদরোগে আশঙ্কা কমাতে চাইলে আমাদের উচিত প্রতিদিন কলা খাওয়া।
  • নিয়মিত কলা খেলে শরীর ভালো থাকে এছাড়াও চুল ও ত্বক ভালো রাখতে কলার ভুমিকা অনেক।
  • শরীরে তাৎক্ষণিক এনার্জি পেতে হলে কলা খেয়ে নেওয়া উচিত। কলা খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে তাৎক্ষণিক এনার্জি বৃদ্ধি পায়।

দিনে কয়টা কলা খাওয়া উচিত?

কলা খাওয়ার কোন নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন নেই। দিনে কয়টা কলা খাবেন না খাবেন সেটা শুধু মাত্র সেই ব্যক্তির উপরেই নির্ভরশীল যে ব্যক্তি কলাটি খেতে ইচ্ছুক। তবে দুটি কিংবা একটি কলায় যথেষ্ট শরীরের পুষ্টির যোগান দিতে। কলায় রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, কিছু পরিমাণ পানি, দ্রবণীয় ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬,পটাশিয়াম ইত্যাদি।

কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। কলার অনেক জাত রয়েছে। যেমন-সবরি, অমৃতসাগর, অগ্নিশ্বর, দুধসর, দুধসাগর,-চাম্পা, চিনিচাম্পা, কবরী, চন্দন কবরী, জাবকাঠালী,বতুর আইটা, গোমা, সাংগী আইটা ইত্যাদি। দিনে দুই একটা কলা খেলে শরীরের সকল কিছুই স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে বেশি ক্ষতি হবে না কিন্তু আমরা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে কলা খেয়ে থাকি তাহলে সেই কলা খাওয়া আমাদের জন্য মৃত্যুর সম্মুখীন হতে পারে।

কলা খাওয়ার অপকারিতাঃ

  • কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে যেমন আমরা জানি তেমন আবার অতিরিক্ত কলা খাওয়ার কারণে এর অপকারিতাও লক্ষ্য করা যায়-
  • আমরা যদি অতিরিক্ত কলা খাই তাহলে আমাদের ঘুমের সমস্যা হতে পারে অর্থাৎ আমরা অনিদ্রায় ভুকতে থাকবো।
  • অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে আমাদের ঠান্ডা লাগতে পারে। এর ফলে আমরা সর্দি কিংবা কাশি রোগে আক্রান্ত হবো। যদি আমাদের সর্দি বা কাশি হয়ে থাকে তাহলে কলা খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে কলা খাওয়ার ফলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। কলায় থাকা প্রচুর ক্যালরি ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
  • আমরা যদি প্রতিনিয়ত বেশি কলা খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের দাঁতের ক্ষয় শুরু হয় অর্থাৎ আমাদের দাঁতের ক্ষতি হয়ে থাকে।
  • কলা যেমন ততক্ষণিক এনার্জি দিয়ে থাকে তেমন আবার অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরকে ক্লান্ত করে ফেলতে পারে।
  • যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে তাদেরকে কলা খাওয়া হতে সাদা দূরে থাকা উচিত কারণ বেশি কলা খেলে মাইগ্রেনের সমস্যা আরও বৃদ্ধি হতে পারে এবং মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে তাদেরকে কলা খাওয়া থেকে দূরে থাকাই ভালো। কারণ বেশি কলা খাওয়ার মাধ্যমে ঠোঁট ফুলে যায় এবং গলায় প্রচুর জ্বালাপোড়া শুরু করে।
  • বেশি কলা খাওয়ার ফলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হতে পারে।
  • কলায় প্রচুর সুগার থাকে ফলে অতীতে কলা খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
  • আমরা যদি অতিরিক্ত কলা খেয়ে থাকি তাহলে কলা খাওয়ার মাধ্যমে পেটব্যথা পর্যন্ত শুরু হতে পারে অর্থাৎ পেটের সমস্যা হয়ে থাকে।
  • আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয় সেসব মানুষ যদি কলা বেশি খেয়ে থাকে তাহলে তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয়ে থাকবে। ইত্যাদি।

কলা গাছের বৈশিষ্ট্যঃ

কলাগাছ কে একবীজপত্রী উদ্ভিদ বলা হয়। এটি মাটিতে লাগানোর পর আস্তে আস্তে লম্বা হয়ে বড় হয় এবং বড় হওয়ার পর কলা গাছে কলা ধরা শুরু করে। বলার অনেক জাত রয়েছে। কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক কারণ কলায় অনেক গুনাগুন রয়েছে। কলাতে রয়েছে ভিটামিন C, ভিটামিন E, ভিটামিন A এগুলো ভিটামিন আমাদেরকে বিভিন্ন রোগবালায় হতে রক্ষা করে থাকে। 

পৃথিবীর সকল গাছ-গাছালি কিংবা প্রাণীদের বৈজ্ঞানিক নাম থাকে যেমন কলার বৈজ্ঞানিক নাম হলো MUSA ACUMINATE । কলা গাছের বডি খুব নরম প্রকিতির। কলা গাছের পাতা অনেক বড় বড় হয় সাথে কলা গাছ লম্বা ভাবে বড় হয়ে থাকে। কলা গাছের কলা ফল গাছের ডগায় গুচ্ছ আকারে হয়ে থাকে।

কলা গাছের ব্যবহারঃ

কলা গাছের উপকারিতা অনেক। কলা গাছের অনেক ব্যবহার রয়েছে। কলা গাছ যেমন মানুষের উপকার করে থাকে তেমনি আবার কলা গাছের কারণে মানুষসহ জীবজন্তু উপকৃত হয়ে থাকে। কলা গাছের জন্ম নেওয়া কলা মানুষ সহ জীবজন্ত খেয়ে থাকে। কলা পাকলে খুবই মিষ্টি হয়ে থাকে এটি খেতে খুবই সুস্বাদু। পাকা কলা যেমন আমরা সরাসরি খেয়ে ফেলতে পারি তেমন আবার কাঁচা কলা তরকারি মাধ্যমে রান্না করে খেয়ে থাকি। 

কাঁচা কলা দিয়ে কলার ভর্তা সহ কলার ভাজি এবং বিভিন্ন জিনিসের সাথে মিশ্রণ করে তরকারি রান্না করে খাওয়া হয়। তাছাড়াও কলা গাছের ভিতরে কলার কাইন ভেজে খাওয়া যায়। তাছাড়াও কলা গাছ যখন আর ফল দেয় না বা কোন প্রয়োজনে কলা গাছ কেটে তা দিয়ে ভেলা বানিয়ে গ্রাম অঞ্চলের মানুষ নদী নালা পার হয়ে থাকে আবার সেই ভেলা করে মাছ ধরে থাকে।

লেখকের শেষ কথাঃ

আমরা এতক্ষণ কলা বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আমরা কলা খাওয়ার উপকারিতা সহ এর অপকারিতা এবং এর ব্যবহার সবকিছুই বিস্তারিত জেনেছি তবে কলা খাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ কলা আমাদের উপকার করে থাকলেও অতিরিক্ত কলা খাওয়ার দ্বারা আমাদের শরীরে ক্ষতি হয়ে থাকে।

একটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই নিয়মিত আমাদের ওয়েব সাইটটি ভিজিট করে পাশে থাকবেন। আপনাদের সাপোর্ট আমাদেরকে  অনুপ্রেরিত করবে ভালো এবং সঠিক বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরার।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url