আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

আপনি কি আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি ঠিক জায়গাতে এসেছেন। আমরা এখানে আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ আনারসের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করেছি। আনারস খাওয়ার উপকারিতা অনেক।


এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনি আনারস বিষয়ে সকল কিছু জানতে পারবেন। আনারসের রয়েছে বিভিন্ন উপকারিতা।

ভুমিকাঃ

আনারস একটি ফল এর নাম।আনারস ফলটি খেতে খুবই সুস্বাদু হয়।এটিকে মৌসুমি ফলও বলা হয়।আনারস এ প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি থাকে যার কারনে আনারস জ্বর,কাশি,জন্ডিস প্রতিরোধে ব্যপক ভুমিকা রাখে।আনারস আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয়।অনেক সময় চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে আনারস এর সাহায্য নিতে হয়।আনারস এর যেমন ভালো দিক রয়েছে তেমন আবার খারাপ দিকও রয়েছে।

আনারস খাওয়ার সঠিক সময়ঃ

আনারস একটি ঔষধিগুণসম্পন্ন ফল,যেখানে রয়েছে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড বহু খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কিংবা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে আনারস খেতে হবে। দাঁত ও মাড়ির যেকোনো সমস্যায় আমাদের কে আনারস খেতে হবে।আনারস খাওয়ার ফলে মুখে জীবাণু আক্রমনের মাত্রা কমে যায় ফলে দাঁত ঠিক থাকে।

তারপর চোখে যদি কম দেখতে পাওয়া যায় তাহলে এই সময় আনারস খেতে হবে।আনারস চোখের দৃষ্টি ভালো রাখতে ভুমিকা রাখে। আবার যদি কারোর খাওয়া দাওয়া করার পর হজম এর সমস্যা থাকে তাহলে তারা আনারস খেতে পারে। আনারস হজম শক্তি বাড়াতে ব্যপক সাহায্য করে।

তাহলে আমরা আনারস খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে এখন অনেকটাই জানতে পারলাম।কিন্তু অতিরিক্ত আনারস খাওয়ার ফলে এটি শরীরের ব্যপক ক্ষতিও করতে পারে।তাই আমাদের উচিৎ কম করে আনারস খাওয়া।

রাতে আনারস খেলে কি হয়?

আনারসে প্রচুর পরিমানে এসিড থাকে।যা আমাদের শরীর এর জন্য ক্ষতিকর ।এই এসিড এর কারনে আমাদের পেটে সমস্যার সৃষ্টি হয়।আনারস খাওয়ার ফলে এসিডিটি বা গ্যাষ্ট্রিকের সমস্যা হয় যা আমাদের শরীর এর জন্য অনেক ক্ষতিকর।

এটির কারনে মানুষ শান্তি মোট থাকতে পারে না ।পেটে প্রচুর পরিমানে ব্যথার সৃষ্টি হয়।যদি কোন মানুষ অতিরিক্ত পরিমানে আনারস খেয়ে থাকে তাহলে তাকে প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে।অতএব রাতে আমাদের উচিৎ আনারস না খাওয়া।

আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতাঃ

প্রথমে আমরা আনারস এর উপকারিতা সম্পর্কে জানব।আনারস এর অনেক উপকারিতা রয়েছে।যেমন-
  • আনারস দেহে রক্ত জমতে দেয় না যার ফলে দেহে রক্ত চলাচল ঠিক থাকে।এর ফলে মানুষ সুস্থ থাকে,মানুষ এর শরীরে রক্ত জাতীয় কোন রোগ সহজে বাসা বাধতে পারে না।আমাদের শরীরে রক্ত জমার সমস্যা থাকলে আমরা চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী আনারস খাবো।
  • আনারস জ্বর,সর্দি,জন্ডিস,কাশি প্রতিরোধে সাহায্য করে।আমাদের মানবদেহে সব চেয়ে বেশি জ্বর,সর্দি,কাশি ও জন্ডিস হয়ে থাকে।কোন মানুষ যদি এই রোগগুলো দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে তাদের উচিৎ আনারস খাওয়া।
  • আনারস আমাদের শরীরের পুষ্টির অভাব পুরন করতে সাহায্য কর থাকে।মানুষ এর শরীরে এর জন্য পুষ্টি খুবই জরুরী।পুষ্টি না থাকলে বা পুষ্টির অভাব থাকলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পরে।তাদের শরীর শুকিয়ে পরে।তাই শরীরের পুষ্টি বাড়াতে আমাদের উচিৎ আনারস খাওয়া।
  • শরীরে যদি মেদ বেড়ে গিয়ে মানুষ মোটা হয়ে যায়,তাহলে আনারস ওজন কমাতে সাহায্য করে।মানুষ যদি সাধারণ এর তুলনায় অধিক মোটা হয়ে যায় তাহলে যেকোনো কাজ করতে তাদের মধ্যে অলস স্বভাব কাজ করে।তারা কোন কাজ ঠিক মত করতে পারে না।তারা অসুস্থ হয়ে পরে ।তাই ওজন কমাতে আমদের কে আনারস খাওয়া উচিৎ।
  • যদি কারোর কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় তাহলে আনারস কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কাজে লাগে।কোষ্ঠকাঠিন্য একটি মারাত্মক রোগ।কোষ্ঠকাঠিন্য হলে মানুষ অনেক কষ্ট পেয়ে থাকে ।কারোর যদি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকে তাহলে তার উচিৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে আনারস খাওয়া।
  • যদি কারোর মাড়ির দাঁতের কোন সমস্যার দেখা দেয়,তাহলে আনারস মাড়ির যেকোনো সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।আনারস মাড়ির দাঁত কে শক্ত রাখে।
  • আনারস মানুষ এর চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়,ফলে মানুষ এর অন্ধ হবার আশংখা অনেকটা কমে যায়।যদি কারর চোখের সমস্যা থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আনারস খাওয়া।আনারস চোখের দৃষ্টি বাড়াতে ব্যপক ভূমিকা রাখে।
  • শরিরে ত্বক কুশকে যেতে লাগলে কিংবা ব্রন বা তৈলাক্ত ভাব দূর করতে আনারস কাজ করে।যদি কারোর চেহারার তৈলাক্ত ভাব বা ব্রন দূর করতে হয় তাহলে সে আনারস খেতে পারে।আনারস তৈলাক্ত ভাব ও ব্রন দূর করতে সাহায্য করে।
  • ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ।ক্যান্সার মানুষ কে মৃত্যু এনে দেয়।পৃথিবীতে সকল রোগের চিকিৎসা উন্নত মানের থাকলেও ক্যান্সার এর কোন উন্নত চিকিৎসা নেই।আনারস মানব শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে কাজ করে।আনারস শরীরে ক্যান্সার হতে বাধা দেয়।
  • আনারস শরীরে কৃমি হতে দেয় না ।কৃমি একটি রোগ।কৃমি মানব শরীরে হলে বমি হয় এবং পেটে ব্যথা হয়।কৃমির কারনে মানুষ খাবার খেলে তা বমির মাধ্যমে বেরিয়ে আসে।কিন্তু আনারস খেলে শরীর থেকে কৃমি পালিয়ে যায়।প্রতিদিন সকাল বেলা আমাদের উচিৎ আনারস এর রস খাওয়া। ইত্যাদি।

আনারস খাওয়ার অপকারিতাঃ

উপরে আমরা জানলাম আনারস খাওয়ার উপকারিতা এবার আমরা জানবো আনারস এর অপকারিতার সম্পরকে।আনারস এর যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন আবার অপকারিতাও রয়েছে।যেমন-
  • আনারসে প্রচুর এসিড থাকার কারনে আমারা যদি অতি মাত্রায় আনারস খাই তাহলে আমাদের পেটে অনেক ব্যথা হতে পারে।যদি কোন ব্যক্তির এর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সেই ব্যক্তি কে কখন খালি পেটে আনারস খাওয়া উচিৎ না।খাই পেটে আনারস খেলে "ফুড ট্যাবু"হবার সম্ভাবনা থাকে।
  • আনারস এর উপকারিতার কথা অনেকেই জানে এবং আনারস খেলে কি কি ভালো হয় তাও জানে।কিন্তু আনারস খেলে যে শরীরে মারাত্মক এলার্জির সমস্যা হয় তা খুব কম মানুষই জানে।আনারস বেশি খেলে চুলকানি সহ ফুস্কুরি ইত্যাদি হয়ে থাকে।
  • বর্তমানে আমাদের দেশে ডায়াবেটিস রোগীর মাত্রা বেড়েই চলেছে।আনারস এ রয়েছে চিনি,এই চিনি ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষতি করে থাকে।তাই যারা ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত তাদের কে আনারস খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
  • আনারস খেলে নারীর গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।তাই গর্ভপাত অবস্থায় নারীদের কে আনারস খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
  • আনারস খেলে বাত এর ব্যথা হতে পারে ।যাদের বাতের ব্যথার রোগ আছে তাদের উচিৎ আনারস খাওয়া থেকে বিরত থাকা।
  • কাচা আনারস দেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর।বর্তমান সময় কাচা আনারস দিয়ে বাজারে অনেক জুস পাওয়া যায় ।আমাদের উচিৎ কাচা আনারস হতে দূরে থাকা ।এটির কারনে বমি করার মত্রা বেড়ে যায়। ইত্যাদি।

আনারস খেলে কি এলার্জি হয়?

আনারস আমদের দেশের একটি অতি পরিচিত ফল।আনারস খেতে অনেকই পছন্দ করে। আনারস আমদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাষ করা হয়।আনারস অনেক সুস্বাদু হলেও আনারস একটি এসিডিক ফল।আনারস খেলে এলার্জির সমস্যা দেখা দেয়।আনারস খাওয়ার কারনে চুলকানিসহ ফুস্কুরি ইত্যাদি হয়।

যাদেরে এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের উচিৎ আনারস খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখা।এলার্জি এমন একটি রোগ যার কারনে মানুষ এর মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে থাকে ।যদি কারোর এলার্জি হয় তাহলে পুরো শরীরে মারাত্মক চুলকানি শুরু হয় এবং পুরো শরীর লাল হয়ে চাক চাক দাগ হয়ে যায়।

আনারস কোন ঋতুতে হয়ঃ

বাংলাদেশে পাহাড়ি অঞ্চলে আনারস চাষ করা হয় কারন পাহাড়ি অঞ্চল আনারস চাষ করার উপযোগী জায়গা।বাংলাদেশে চট্টগ্রাম,টাঙ্গাইল,মধুপুর,নেত্রকোনা,কুমিল্লা,সিলেট,দিনাজপুর।ময়মনসিংহ জেলায় আনারস চাষ হয়।

আশ্বিন থেকে অগ্রাহায়ন মাসে আনারস বপন করা হয় ।এই আশ্বিন থেকে অগ্রাহায়ন মাস আনারস চাষের উপযোগী।পৃথিবীতে সব চেয়ে বেশি আনারস চাষ হয় কোস্টারিকায়।

আমার মতামতঃ

এতক্ষন আমরা আনারস এর উপকারিতা ও অপকারিতা সহ আনারস এর বাহ্যিক অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে পারলাম।আনারস একটি সুস্বাদু ফল হওয়ার পাশাপাশি এর বেশ কিছু ভাল ও মন্দ দিক রয়েছে।আমাদের কে প্রয়োজন এর বেশি আনারস খাওয়া ঠিক না।

আনারস আমাদের শরীরে অনেক উপকার করে থাকলেও আনারস মানুষ এর মৃত্যুর কারনও হতে পারে।আমাদের উচিৎ আনারস খাওয়া নিয়ে সচেতন থাকা এবং চিকিৎসক এর কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া।

পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে পাশে থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url