কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

আপনি কি কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আপনি এখানে কলা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন যা আপনার জন্য অনেক লাভবান হবে।


কলা একটি মিষ্টি জাতীয় ফল। কলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের লেখা এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়তে থাকুন।

ভূমিকাঃ

কলা হল এক ধরনের ফল যা মুসা গোত্রের উদ্ভিদে জন্মে। পাকা হলে এগুলি সাধারণত হলুদ হয়, তবে কিছু জাত লাল বা সবুজ হতে পারে। কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬ এবং ভিটামিন সি রয়েছে। কলা খেতে মিষ্টি হয়ে থাকে। 

কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। কলার বিভিন্ন জাত রয়েছে। যেমন সাগরকলা, অনুপম কলা ইত্যাদি। কলা এমন একটি ফল যেখানে রয়েছে অসংখ্য ভিটামিন। কলা খাওয়ার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের শরীরে এনার্জি চলে আসে।

কলা খাওয়ার উপকারিতাঃ 

  • হার্টের স্বাস্থ্য: কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম এবং ভিটামিন সি এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা হার্টের স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে। পটাসিয়াম গ্রহণ রক্তচাপ পরিচালনা করতে এবং কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে। একটি মাঝারি কলা আপনার দৈনিক পটাসিয়ামের চাহিদার প্রায় 9% প্রদান করে।
  • হাঁপানি: 2007 সালের একটি সমীক্ষায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে কলা খাওয়া হাঁপানিতে আক্রান্ত শিশুদের শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। কলায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পটাসিয়াম উপাদান এই প্রভাবে অবদান রাখতে পারে, যদিও এটি নিশ্চিত করার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ: ল্যাবরেটরি তদন্ত ইঙ্গিত দেয় যে লেকটিন, কলায় পাওয়া প্রোটিন, লিউকেমিয়া কোষগুলিকে বাড়তে বাধা দিতে সাহায্য করতে পারে। লেকটিন একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে, ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেলগুলি অপসারণ করতে সাহায্য করে যা ক্যান্সার হতে পারে। উপরন্তু, কলায় থাকা ভিটামিন সি উপাদান ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক ভূমিকা পালন করতে পারে।
  • হজমের স্বাস্থ্য: কলায় ফাইবার এবং পেকটিন থাকে, যা নিয়মিততা বাড়ায় এবং কোলন স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে। কাঁচা কলায় প্রতিরোধী স্টার্চ একটি প্রিবায়োটিক, পুষ্টিকর উপকারী অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া হিসাবে কাজ করে।
  • ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনাঃ আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন তাদের ফাইবার সামগ্রীর কারণে কলা এবং অন্যান্য ফল খাওয়ার পরামর্শ দেয়। ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এবং সামগ্রিক গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণ উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

কলার ক্ষতিকর দিকঃ

  • স্টার্চ এবং চিনির উপাদান: কলায় স্টার্চ এবং প্রাকৃতিক শর্করা বেশি থাকে। টাইপ 2 ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কিছু লোকের রক্তে শর্করার মাত্রার উপর প্রভাবের কারণে তাদের কলা খাওয়ার নিরীক্ষণ করতে হতে পারে।
  • দাঁতের ক্ষতিঃ অতিরিক্ত কলা খেলে এটি আমাদের দাঁতের ব্যপক ক্ষতি করে থাকে। কলা খাওয়ার উপকারিতা থাকলেও অতিরিক্ত কলা খাওয়া থেকে দূরে থাকাই ভালো।
  • ওজন বাড়ায়ঃ কলা যদি পরিমাণমত না খাই তাহলে কলা আমাদের শরীর এর ওজন বৃদ্ধিতে ভুমিকা রাখে। আমাদের শরীরের ওজন যদি বেশি বেড়ে যায় তাহলে আমাদের শরীর আরও নানা রকম রোগে আক্রান্ত হবে।
  • পেট খারাপঃ অতিরিক্ত কলা খেলে কলা আমাদের পেটের ক্ষতি করে থাকে। এর ফলে পেটে ব্যথা সহ নানারকম সমস্যা দেখা যায়।
  • গ্যাস এর সমস্যাঃ কলা বেশি খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের গ্যাস এর সমস্যা হয়ে থাকে।
  • শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাঃ আমরা যদি বেশি কলা খাওয়া বন্ধ করতে না পারি তাহলে আমাদের শ্বাস প্রশ্বাসের  সমস্যা হবে। 
  • কোষ্ঠকাঠিন্যঃ কলা চাহিদার চেয়ে বেশি খেলে এটি দ্বারা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হতে পারে।

পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতাঃ

পাকা কলা খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের অনেক উপকার হয়ে থাকে। পাকা কলা খেতে ভারি মিষ্টি ও সুস্বাদু। আমরা যদি নিয়মিত পাকা কলা খেতে পারি তাহলে পাকা কলা আমাদের শরীরের রক্তচাপ এর মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে। আবার পাকা কলায় রয়েছে প্রচুর আয়রন যা আমাদের শরীরের এটি অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তবে অতিরিক্ত পাকা কলা খেলে আমাদের হজম এর শক্তি নষ্ট হবে পাশাপাশি আমাদের শরীর এর কোষ নষ্ট হয়ে যাবে। তাই পাকা কলা খাবেন কিন্তু তা অবশ্যই অতিরিক্ত যেন না হয়, সেই ব্যপারে লক্ষ রাখতে হবে।

ভরা পেটে কলা খেলে কি হয়ঃ

কলা খাওয়ার উপকারিতা থাকলেও ভরা পেটে কলা খাওয়া উচিত না। ভরা পেটে যদি আমরা কলা খেয়ে থাকি তাহলে এর ফলে হজম এর সমস্যা সহ পেট ব্যথা, অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি নানারকম সমস্যা হতে পারে। তাই ভরা পেটে কলা খাওয়া হতে সাবধান থাকাই ভালো।

কাঁচা কলায় কি কি ভিটামিন আছেঃ

কলা খাওয়ার উপকারিতা তো আছেই কিন্তু কাঁচা কলায় কি কি ভিটামিন আছে? তা কি জানেন? কাঁচা কলার রঙ সবুজ হয়ে থাকে। কাঁচা কলায় রয়েছে 
  • পটাশিয়াম, 
  • ভিটামিন বি৬, 
  • ম্যাগনেশিয়াম, 
  • ম্য়াঙ্গানিজের,
  • খনিজ লবণ। ইত্যাদি। 

লেখকের পরামর্শঃ

যেহেতু কলা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে সেই অনুযায়ী কলা খাওয়া ভালো। কিন্তু অবশ্যই কলা খাওয়ার সীমাবদ্ধতা রাখতে হবে। কারণ অতিরিক্ত কলা খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরের অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই কলা খাওয়ার সময় আমাদেরকে আমাদের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী কলা খেতে হবে।

এটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আমাদের ওয়েব সাইটে নিয়মিত ভিজিট করে পাশে থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url