ঘি এর পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

আপনারা কি ঘি এর পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আপনি এখানে ঘি এর পুষ্টি উপাদান সহ ঘি এর উপকারিতা, ঘি এর ক্ষতিকর দিক সহ ঘি সম্পর্কে অনেক কিছু বিস্তারিত জানতে পারবেন।


ঘি অনেক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি খাবার যা শরীর এর অনেক উপকারে আসে। ঘি সম্পর্কে আরো কিছু জানতে সম্পন্ন আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইল।

ভূমিকাঃ 

ঘি দ্বারা মানুষ অনেক উপকার পেয়ে থাকে। রোগ মানুষকে সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে। খেয়ের উপকারিতা যেমন মানুষের কে বিভিন্ন রোগ বালাই হতে রক্ষা করে তেমন আবার অতিরিক্ত ঘি খাওয়ার মাধ্যমে মানুষের ব্যাপক ক্ষতিও হতে পারে। সাধারণত ঘি গৃহপালিত বিভিন্ন পশুর খাঁটি দুধ হতে তৈরি করা হয়।

পুরো বিশ্বে ঘিয়ের চাহিদা ব্যাপক। মানুষ বিভিন্ন উপায়ে ঘি এর স্বাদ ভোগ করে থাকে। ঘিয়ে থাকা পুষ্টিগুণ এ অনেক উপকারিতা রয়েছে। ঘি অনেক উপকার করলেও অনেকে আবার ঘি খেতে পারে না শুধু মাত্র ঘি এর ঘ্রাণ। ঘি ঘ্রাণ একটু অন্যরকম যা অনেকেই নিতে পারে না। যারা ঘি খায় তাদের নিয়মিত পরিমাণ বুঝে ঘি খাওয়া উচিত।

ঘি এর পুষ্টি উপাদানঃ


ঘি ছোট থেকে বড় প্রায় সবাই পছন্দ করে। ঘি বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার করা হয়। ঘি এর উপকারিতা ব্যপক। ঘি শরীর এর পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করতে ব্যপক ভুমিকা পালন করে।শরীর ও মন সুস্থ রাখতে ঘি এর তুলনা অপরিসীম। ঘি গরু,মহিষ ইত্যাদি গৃহপালিত পশুর দুধ হতে তৈরি করা হয়। সাধারণত মানুষ গরুর দুধ দিয়ে তৈরি ঘি বেশি ব্যবহার বা খেয়ে থাকে। ঘি দিয়ে নানারকম সুস্বাদু খাবার বানানো হয় যা খেতে ভারি মজার হয়। ঘি এর পুষ্টি উপাদান নিচে দেওয়া হলো-

  • ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডঃ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এটি শরীর এর হৃদরোগ এর ঝুঁকি কমিয়ে ফেলে। এছারাও ক্যান্সার, ডিমেনসিয়া ও আর্থাইটিস কিংবা বিষন্নতা থেকে মানুষ দের কে বাচিয়ে থাকে। ইলিশ মাছ,পাতা শাঁক,টুনা মাছ,বাদাম ইত্যাদি খাবারে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে।
  • অ্যারাকিডোনিকঃ আলসারেটিভ কোলাইটিস এবং ক্রোনস ডিজিজের চিকিৎসায় এই অ্যারাকিডোনিক এর  অনেক উপকারিতা লক্ষ করা যায়। এটি মানসিক স্বাস্থ্য,হৃদ রোগের আশঙ্কা দূর করণ, হরমোন নিয়ন্ত্রণ, কোষ বিভাজন নিয়ন্ত্রণ এবং রক্তনালী সহ শরীরের অনেক উপকার করে থাকে। সঠিক অর্থে ঘি এর উপকারিতা প্রচুর।
  • লিনোলেনিক ভিটামিন এঃ ভিটামিন এ শরীর এর জন্য অনেক উপকারি।যাদের দৃষ্টি শক্তি দুর্বল তাদের জন্য ভিটামিন এ এর ভুমিকা অপরিসিম। ভিটামিন এ রাত কানা রোগ দূর করতে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন বি ১২ঃ ভিটামিন বি মানব শরীর এর রক্তশূন্যতা, অবসাদ, স্নায়ুর ব্যথা, অসারতা, রক্ত জমাট ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন ডিঃ ভিটামিন ডি এর অভাবে শরীরে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। ভিটামিন ডি এর কারনে কার্ডিওভাসকুলার রোগ , টাইপ 1 ডায়াবেটিস , টাইপ 2 ডায়াবেটিস,শরীর এর জয়েন্টে ব্যথা,চুল পরে যাওয়া,খুদা কম লাগা ইত্যাদি রোগ হয়ে থাকে। ঘি ভিটামিন ডি থাকায় এসব রোগ এর আসংখা কমে যায়।
  • ভিটামিন ইঃ ভিটামিন ই বন্ধ্যত্বের সমস্যা, বার্ধক্যজনিত সমস্যা, দূর করতে ও হাড় ভালো রাখতে সাহায্য করে। বিভিন্ন খাবার এ ভিটামিন ই থাকলেও অনেকে আবার ক্যাপসুল এর মাধ্যমে ভিটামিন ই সেবন করে থাকে। ত্বক ও চুলের যত্নে ভিটামিন ই এর ভুমিকা রয়েছে। ভিটামিন ই ত্বকের উজ্জলতা সহ চুল পরা বন্ধ করতে সাহায্য করে।
  • বুটিরিক অ্যাসিডঃ বুটিরিক অ্যাসিড আইবিএস,ডায়রিয়া অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমে ব্যাকটেরিয়া ভারসাম্যতা রক্ষা করে থাকে।
  • ভিটামিন কেঃ ভিটামিন কে শরীর এ রক্ত জমাট হতে বাধা দেয়। ভিটামিন কে দ্বারা মানুষ উপকার পেয়ে থাকে। এছারাও ইত্যাদি পুষ্টিগুণ দ্বারা ভরপুর থাকে ঘি।

ঘি এর উপকারিতাঃ

  • ঘি এর উপকারিতা অনেক। কয়েকটি ঘি এর উপকারিতা নিচে দেওয়া হলো।
  • নিয়মিত ঘি খেলে ঘি হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে ভূমিকা রাখে।
  • যাদের কষ্টকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে তারা যদি চিরতর কষ্টকাঠিন্য সমস্যা হতে মুক্তি পেতে চায় তাহলে কি একটি উপযুক্ত মাধ্যম।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে ঘি এর ভূমিকা রয়েছে।
  • ঘি খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • মস্তিষ্কে থাকা বিভিন্ন কোষ ঘি এর মাধ্যমে সক্রিয় থাকে।
  • দেহের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ থাকে।
  • শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথার সমস্যা দূর হয়।
  • যারা বেশি মোটা পান নিয়ে ভোগেন তাদের জন্য ঘি ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • ঘি শরীর এ খুদা বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
  • গর্ভবতী অবস্তায় ঘি খাওয়ার ব্যপক উপকারিতা রয়েছে।

ঘি এর ক্ষতিকর দিকঃ

ঘি এর অপকারিতা যেমন রয়েছে তেমন অপকারিতাও রয়েছে। ঘি একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্য খাবার। যা খাঁটি দুধ থেকে তৈরি হয়ে থাকে।
  • অতিরিক্ত ঘি খাওয়ার মাধ্যমে শরীর এ হার্ট অ্যাটাক কিংবা হৃদরোগ এর আসংখা অনেক বেড়ে যায় কারন অতিরিক্ত ঘি খাওয়ার ফলে শরীর এর কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেক বৃদ্ধি হয়ে যায়।
  • ঘি খেলে যেমন ওজন কমে তেমন আবার অতিরিক্ত ঘি খাওয়ার মাধ্যমে শরীর এর ওজন ও বেড়ে যেতে পারে।
  • অতিরিক্ত ঘি খাওয়ার ফলে পেটে নানারকম অসুবিধা হয়ে থাকে যেমন হজম শক্তির সমস্যা।
  • আবার অতিরিক্ত ঘি খাওয়ার ফলে পেট ফাঁপা কিংবা পেট ফুলেও যেতে পারে।
  • যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের কে ঘি খাওয়া থেকে নিজেদের বিরত রাখতে হবে কারন যাদের ডায়াবেটিস এর সমস্যা রয়েছে তাদের ঘি দ্বারা বেশি ক্ষতি হতে পারে।
  • এছারাও যাদের হাড় এর সমস্যা রয়েছে তারা যদি অতিরিক্ত ঘি খায় তাহলে এর বিপরিত ও হতে পারে। তখন হাড়ের ক্ষতি হবে।

ঘি খেলে কি মোটা হয়?

ঘি এর যেমন উপকার রয়েছে তেমন আবার ক্ষতি। আমারা জানি কোন কিছু অতিরিক্ত ঠিক নয়। ঘি যেমন ওজন কমাতে সাহায্য করে তেমন আবার অতিতিক্ত ঘি শরীর এর ওজন বাড়াতে পারে। গবেষণায় প্রমানিত ঘি এ প্রচুর ক্যালরি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যা শরীর কে মোটা করে থাকে। আমাদের কে ঘি পরিমানমত খাওয়া উচিত। যদি আমরা অতিরিক্ত ঘি খাই তাহলে শরীর মোটা হওয়া ছাড়াও বিভিন্ন রকম সমস্যায় পরতে হবে।

ঘি খাওয়ার নিয়মঃ

ঘি খাওয়ার অনেক নিয়ম মাদ্ধম ও নিয়ম রয়েছে। ঘি এর স্মোকিং পয়েন্ট বেশি থাকায় ভেজে খাওয়ার খাবার গুলো শুধু মাত্র ঘি দিয়েও ভেজে খাওয়া যায়। ঘি আবার গরম দুধের সাথে পরিমাণমত মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। আবার ঘি বিভিন্ন তরকারিরমদ্ধে রান্না করেও খাওয়া যায়। বিশেষ বিয়ে বাসায় বিরিয়ানি কিংবা পায়েস রান্নায় ঘি ব্যবহার করা হয় এতে রান্নার স্বাদ বৃদ্ধি পায়। 

আবার অনেকে রুটির সাথে ঘি মিশিয়ে তা খেয়ে থাকে। ঘি ছোট থেকে বড় সবাই খেতে পারে। বিশেষ করে গরম খিচুরির সাথে ঘি খেতে ভারি মজা লাগে। ঘি এর চাহিদা বাজারে ব্যপক। সাধারণত ২০০ মিলি ঘি এর দাম বাজারে ২৫০ হতে ৩৫০ কিংবা ভালো মানের ঘি হলে আরও বেশি দামে বিক্রয় করা হয়। ঘি অনেক প্রচলিত খাবার। তাছাড়াও ঘি কিন্তু খালি পেটে খেলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। প্রতিদিন সকালে এক চামচ করে ঘি খাওয়া উচিত।

লেখকের শেষ কথাঃ 

আমরা এতক্ষণ ঘি সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারলাম। আসলে ঘি দারা আমাদের অনেক উপকার হয়ে থাকলেও এই দ্বারা কিন্তু আমাদের অনেক ক্ষতিও হয়ে থাকে। আমাদেরকে কখনো পরিমাণ এর চেয়ে বেশি ঘি খাওয়া উচিত না। বর্তমানে অনেক জায়গায় ঘি এর মধ্যে ভেজাল পাওয়া যায়। আমাদেরকে অবশ্যই ঘি কেনার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

আমাদের এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে পাশে থাকতে ভুলবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url